আজ  (৯ সেপ্টেম্বর) সাবেক সফল শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য প্রয়াত এ.এস.এইচ.কে সাদেকের ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তার কেশবপুরস্থ বাসভবনে সকাল ৭টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৭৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৩৪ সালের ৩০ এপ্রিল যশোরের কেশবপুর উপজেলার বড়েঙ্গা গ্রামের একটি সমভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে এই গুনী ও কীর্তি সন্তানের জন্ম হয়। তার পিতার নাম ইয়াহিয়া সাদেক (যুগ্ম কমিশনার), মাতা আসগারুন্নিসা সাদেক। ০৭ ভাই ও ০২ বোনের মধ্যে সাদেক ৩য়। তিনি ১৯৪৯ সালে হেয়ার স্কুল, কলকাতা থেকে এস.এস.সি, ঝঞ, ঢ’ধারবৎং ঈড়ষষবমব থেকে ১৯৫১ সালে এইচ.এস.সি ও ১৯৫৪ সালে বি.এ (সম্মান) অর্থনীতি, ১৯৫৫ সালে (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) এম.এ (অর্থনীতি) সাফ্যলের সাথে পাস করেন এছাড়া ১৯৭০-৭১ সালে যুক্তরাজ্যের নাফিল্ড ফাউন্ডেশন ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেলোশিপ লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সি.এস.পি) ক্যাডারে যোগদান করেন। ১৯৫৯-৬১ পর্যন্ত মহাকুমা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬-৬৭ সালে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ও ১৯৬৯-৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান গর্ভনরের সচিব হন, তিনি প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দীন আহমদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পরবর্তীতে তিনি স্বাধীনতার সময় মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় সহযোগীতাসহ দেশে, বিদেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি সর্বশেষ দেশের জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৮৮ সালের ২৫ মার্চ স্বেচ্ছায় চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। কর্মজীবনে রাষ্ট্র তথা আন্তর্জাতিক ভাবে নানা স্বীকৃতে তিনি ভুষিত হন। কর্মক্ষেত্রে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত সকল প্রকার লোভ লালসার উর্দ্ধে থেকে সততার পরাকাষ্ঠায় নক্ষত্রের মতো এক কর্মযোগী মানুষ ছিলেন এ.এস.এইচ.কে সাদেক। তিনি অন্তরে যা লালন করতেন, বিশ্বাস করতেন, ব্যক্তিজীবনে তা বাস্তবে প্রতিফলনের চেষ্ঠা করতেন। তিনি দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার প্রয়াসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বাসিত হয়ে একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ১৯৯২ সালে বঙ্গবন্ধু আদর্শের রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মনোনিত হন। সল্প সময়ের ব্যবধানে দলীয় রাজনীতিতে অগ্রণী ভূমিকায় মুগ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে যশোর- ৬, জাতীয়- ৯০ কেশবপুর আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন দেন এবং তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে এ আসন থেকে জয় লাভ করেন। ৯৬ সালের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আওয়ামীলীগ সরকারের শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তার কেশবপুরস্থ বাসভবনে সকাল ৭টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৭৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে কেশবপুরে আজ বুধবার তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন, কোরানখানি ও দলীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। মরহুম সাদেক ও ইসমাত আরা সাদেক ব্যক্তিগত জীবনে দু’টি সন্তানের জনক-জননী। পুত্র তানভীর সাদেক (কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার), মেয়ে নওরীন সাদেক (স্থপতি)। তার স্ত্রী কেশবপুরের এমপি ইসমাত আরা সাদেক ২১ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।